অন্যন্য

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা 2023, দাম, বেতন, ভিসা এজেন্সি বিস্তারিত

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা

দীর্ঘ কয়েক বছর পর মালয়েশিয়া ভিসা পুনরায় চালু করা হয়েছে। আপনারা যারা মায়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা নিয়ে দেশটিতে কাজের জন্য যেতে চান তাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ। বর্তমান শ্রমবাজারে মালশিয়াতে বাংলাদেশের মানুষদের চাহিদা রয়েছে। তাই আপনারা যারা মালেশিয়া কোম্পানি ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের জন্য এটা উত্তম সময়।

আমাদের অনেকে মালশিয়া যেতে চায় কিন্তু মালয়েশিয়া ভিসার দাম, বেতন ও ভিসা এজেন্সি সম্পর্কের ধারনা না থাকার কারনে নানা সমস্যায় পড়ে যায়। তাই আজকের আর্টিকেলটিতে ভিসার দাম, খরচ ও ভিসা এজেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব।

মালয়েশিয়া ভিসার খবর

আপনারা যারা মালয়েশিয়া ভিসা নিয়ে কাজের জন্য দেশটিতে যেতে চান। তাদের অনেকে একটি কমন প্রশ্ন থাকে মালয়েশিয়া ভিসার খবর কি? এবং মালয়েশিয়া ভিসা কবে খুলবে। গত ১জানুয়ারি ২০২৩ বাংলাদেশ সরকার ও মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেদিন মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য সকল প্রকার ভিসা সেবা খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপনারা যারা মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা নিয়ে কাজের জন্য যেতে চান তার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন।

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা

মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য আমাদের দেশ থেকে অনেক প্রবাসী ভাই বোনেরা দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করছে। এখন তাদের অপেক্ষার দিন অবশেষ হওয়ার পালা। এই বছরের ১লা জানুয়ারি ২০২৩ সালে মালয়েশিয়া ভিসা খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপানারা মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া যেতে পারবেন। মালয়েশিয়াতে অনেক ধরনের ফ্যাক্টটি রয়েছে। আপানি আপনার পছন্দ অনুযায়ী ফ্যাক্টরি চয়েজ করে তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকেন।

মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত

মালয়েশিয়া যাওয়ার পূর্বে মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত তার সম্পর্কে সঠিক ধারনা নেওয়া প্রয়োজন। সরকারি ও বেসরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়া যায়। মালয়েশিয়া ভিসার খরচ নির্ভর করবে আপনি কোন মাধ্যমে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন। আপনি যদি সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যান তাহলে সরকার নির্ধারিত ফি দিয়েই যেতে হবে। সেক্ষেত্রে, মালয়েশিয়া ভিসার খরচ পড়বে ৭৮০০০০টাকা থেকে ৮০০০০টাকার মত।

মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত
মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত

আর যদি বেসরকারি মাধ্যমের সহযোগিতায় মালয়েশিয়া যান তাহলে খরচ অনেকটাই বেশি লাগবে। বেসরকারি এজেন্সিগুলি তাদের সিন্ডিকেট অনুযায়ী মালয়েশিয়া ভিসার দাম নির্ধারন করে থাকে। একজন লাইসেন্সধারী রিকুটিং এজেন্সিগুলি মালেশিয়া যাওয়ার জন্য ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ৫০হাজার টাকার নিয়ে থাকে। তাই আপনি যদি মালয়েশিয়া সরকারি ভিসায় যান তাহলে অনেকটা সাশ্রয়ী হবে।

মালয়েশিয়া ভিসা এজেন্সি

আপনারা যারা মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা নিয়ে দেশটিতে বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কাজের জন্য যেতে চান আগে থেকেই সতর্ক হোন। কেননা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ১১ টি ভিসা এজেন্সির অনুমোদন দিয়েছেন। আপনি যদি সরকার নির্ধারিত এই এজেন্সির মাধ্যমে যদি যান তাহলে খুব সহজেই যেতে পারবেন। আর যদি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এজেন্সি ব্যবতী অন কোন মালয়েশিয়া ভিসা এজেন্সি সাথে কন্টাক্ট করে ভিসা করেন তাহলে নানা সমস্যায় পড়তে পারেন।

অনেক সময় আপনার ভূয়া এজেন্সি কাছে টাকা ও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার কারনে ভিসা হয় না। টাকা ফেরত না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। চলুন তাহলে প্রবসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত মালয়েশিয়া ভিসা এজেন্সিগুলির নাম জেনে নেইঃ

  1. নিউ এজ ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি
  2. মেসার্স শাখা ফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল 
  3. গ্রীনল্যান্ড ওভারসীজ
  4. মেসার্স আমিয়াল ইন্টারন্যাশনাল
  5. মেসার্স আল বুখারি ইন্টারন্যাশনাল
  6. ইম্পেরিয়াল রিসোর্স লিমিটেড
  7. মেসার্স সাউথ পয়েন্ট ওভারসিস লিমিটেড
  8. মেসার্স আহমেন ইন্টারন্যাশনাল
  9. বিনিয়ময় ইন্টারন্যাশনাল
  10. মেসার্স আকাশ ভ্রমণ
  11. আরভিং ইন্টারন্যাশনাল

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার কাজ সমূহ

আপনারা যারা ফ্যাক্টরি ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে চাচ্ছেন সেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে। প্রথমে আপনাকে পছন্দ করতে হবে আপনি কোন ফ্যাক্টরিতে যাবেন। মালয়েশিয়াতে অনেক ধরনের ফ্যাক্টরি রয়েছে। যেমন মনে করেনঃ ফার্নিচার, ইলেকট্রনিক্স, গ্লাস ও ফুডস, ক্যামিক্যালস ইত্যাদি ধরনের আরও অনেক ধরনে ফ্যাক্টরি রয়েছে। এই ধরনের ফ্যাক্টরির মধ্যে আপানাকে প্রথমে সিলেক্ট করতে হবে কোন ফ্যাক্টরিতে যাবেন।

ফ্যাক্টরির উপর ভিত্তি করে আপনার কাজ নির্ভর করবে। তবে ফ্যাক্টরি ভিসার কিছু কমন কাজ রয়েছে। চলুন তাহলে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার কাজ সমূহ জেনে নেওয়া যাকঃ মেশিন আপারেটিং, টাইম কিপিং, প্যাকেজিং, লোডিং-আনলোডিং, ক্লিনিং, অফিস বয় ইত্যাদি।

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা যাওয়ার পূর্বে আপনি যে কাজে দক্ষ সেই কাজের জন্য ভিসা করবেন। তাহলে আপনার কাজ করতে কোন প্রকার অসুবিধা হবে না। আপনি যদি আপনার কাজে দক্ষতা দেখাতে পারেন তাহলে আপানার বেতনের পরিমাণও অনেক হবে।

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা
মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার বেতন কত

আপনার কাজের উপর নির্ভর করবে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার বেতন কত হবে। আপনি যদি আপনার  কাজে দক্ষ ও এক্সট্রা সময় দেন তাহলে নির্ধারিত বেতনের থেকে অনেক টাকা বেশি পাবেন। তবে বর্তমানে যে সব শ্রমিকেরা মালয়েশিয়ায় ফ্যাক্টরি ভিসায় কর্মরত আছেন তাদের বেতন ৪০০০০ টাকা থেকে ৪৫০০০ টাকার মত। এছাড়াও বিভিন্ন রকমের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা 2023দাম বেতন, ভিসা এজেন্সি বিস্তারিত
মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা 2023দাম,বেতন , ভিসা এজেন্সি বিস্তারিত

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা’র প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপনারা যারা মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা নিয়ে কাজ করতে মালয়েশিয়া যেতে চাচ্ছেন তাদের কিছু পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে। মায়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। মালয়েশিয়া যাওয়ার পূর্বে আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১৮ থেকে ২৪ মাস মেয়াদ থাকতে হবে। মালয়েশিয়া যাওয়ার বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর এবং সবোচ্চ ৩৫ বছর হতে হবে। তবে কিছু কিছু কোম্পানি ৪০ বছর বয়সের লোকদেরও কাজ করার সুযোগ দিয়ে থাকে।

মালয়েশিয়ার যাওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পর্ণ করা। আপানাকে করোনা টিকার যে কোন গ্রুপের দুই ডোজ কমপ্লিট করতে হবে।

আপনাদের মধ্যে যে সকল লোক ধরা খেয়ে মালয়েশিয়া থেকে আসছেন তারা পাচঁ বছর পূর্বে মালয়েশিয়া যেতে পারবেন না। আপানার মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসার পাচঁ বছর পর নতুন করে ভিসা করতে পারবেন।

মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য আপানার সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড ছবি লাগবে। এছাড়াও আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে। আপানার যদি জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে তাহলে আপনি ড্রাইবিং লাইসেন্সএর মাধ্যমে ভিসার আবেদন প্রকিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।

মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম

মালয়েশিয়ার যাওয়ার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম ভিসা আবেদন করতে হবে। আপনি সরকারি বা বেসরকারি উভয়ভাবে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনার হাতের কাছে থাকা মোবাইলের মাধ্যমে ঘরে বসে মালয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজন হবে ইন্টারনেট সংযোগ। চলুন তাহলে ঘরে বসে মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।

  • সর্বপ্রথম আপনার মোবাইলের প্লে স্টোর থেকে আমি প্রবাসী অ্যাপসটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।
  • এরপর আপনি পরবর্তীতে ক্লিক করে আপনার মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিবেন।
  • মোবাইল নাম্বার দেওয়া শেষ হলে কনফর্মেশনের জন্য একটি পিন কোড দেওয়া হবে। আপনি পিন কোড বসিয়ে কনফার্ম করে নিবেন।
  • এরপর আপনি সিকিউরিটির জন্য একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড দিবেন।
  • পাসওয়ার্ড দেওয়া শেষ হলে পরবর্তীতে ক্লিক করবেন।
  • তারপর আপনি তিনটি দেশ সিলেক্ট করবেন। মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রথমে মালয়েশিয়া দেশ সিলেক্ট করতে হবে।
  • পরবর্তীতে আপনি যে পেশায় মালয়েশিয়া যেতে চান অর্থাৎ, আপনি যে পেশায় দক্ষ তা সিলেক্ট করবেন।এখানে আপনি এক বা একাধিক পেশা সিলেক্ট করতে পারবেন।
  • তারপর আপনাকে আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে হবে।
  • এরপর বিএমএটি রেজিশটেশন করতে হবে।
  • আপনি যেহেতু মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক তাই আপনাকে মালয়েশিয়া দেশ সিলেক্ট করতে হবে।
  • আপনি যে পেশায় মালয়েশিয়া যাবেন তার নাম সিলেক্ট করে দিবেন।
  • এরপর আপনার পাসপোর্ট স্ক্যান করতে হবে।
  • তারপর আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করে নিতে হবে।
  • সব ধরনের তথ্য প্রদানের পর আপনার পাসপোর্ট ভ্যারিফিকেশনের জন্য ৭২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।
  • ভ্যারিফিকেশন ডান হওয়ার পর আপনাকে পেমেন্ট এর অপশন দিয়ে দিবে।
  • এরপর বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করে দেওয়ার মাধ্যমে অনলাইনে মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।

মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার নিয়ম

মালয়েশিয়া ভিসা করার পর আপনাকে আপনার ভিসা চেক করে নিতে হবে। মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার জন্য আপনি আপনার কোম্পানির নিবন্ধন নাম্বার বা পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক করতে পারবেন। কোম্পানির রেজিশটেশন নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক করার জন্য আপানাকে প্রথমে https://eservices.imi.gov.my/myimms/PRAStatusএই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনার কোম্পানির রেজিশটশন নাম্বার দিয়ে আপনার ভিসা স্টাটাস চেক করে নিতে পারবেন।

পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে মালয়েশিয়া ভিসা চেক করুন
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে মালয়েশিয়া ভিসা চেক করুন

আপনি আপনার পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক করতে পারবেন। পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার জন্য https://eservices.imi.gov.my/myimms/PRAStatus এই ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর আপনি কান্ট্রি সিলেক্ট করে নিবেন। তারপর পাসপোর্ট নাম্বার দেওয়ার পর আপনি আপনার ভিসা স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন।

পরিশেষে,

মালয়েশিনয়া একটি উন্নত দেশ। প্রতিবছরই অনেক লোক এই দেশটি কর্মসংস্থানের যায়। আপনিও যদি দেশটিতে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কারন একজন দক্ষ শ্রমিকের বেতন ও সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি। আর ভিসা করার পূর্বে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রালয়ের অনুমোদিত এজেন্সি থেকে ভিসা করে নিতে হবে। অনেক সময় ভূয়া এজেন্সিগুলি পাসপোর্ট ও টাকা জমা দেয় না। এর ফলে আপনার ভিসা হবে না। তাই মালয়েশিয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button