ইন্টারনেট

সোলার প্যানেল কি? সোলার প্যানেল কিভাবে কাজ করে, এর দাম ও ব্যবহার

সম্মানিত পাঠক/পাঠিকা! আপনি সোলার প্যানেল কি তা জানতে চাচ্ছেন? অতিরিক্ত লোড শেডিং থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরিকৃত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে চান? কিন্তু বুঝতে পারছেন না এটি কিভাবে কাজ করে! এর দাম কত হবে! চিন্তার কোন কারণ নেই। আজকের এই আর্টিকলটিতে, সোলার প্যানেল সংক্রান্ত সকল ধরণের প্রশ্ন সম্পর্কে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

আমাদের এই ফিচার পোষ্টের মাধ্যমে, আপনি নিজে থেকেই বাসা বাড়িতে সোলার প্যানেল তৈরি, এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে বুঝতে পারবেন। চলুন তাহলে সোলার প্যানেল সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তরগুলি জেনে নেওয়া যাক।

সোলার প্যানেল কি

পৃথিবীর সকল শক্তির মূল উৎস হচ্ছে সূর্য। সূর্য থেকে পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে ৩৯৪৫.৯৯৬ ওয়াট শক্তি পৌঁছে যা মোট চাদিহার ১০,০০০ গুণ বেশি। এই সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ পৃথিবীর বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো সম্ভব।

শক্তির সংরক্ষণশীলতার নীতি অনুসারে, পৃথিবীতে মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট। শক্তির সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না। শক্তি কেবল এক রুপ থেকে অন্য রুপে রুপান্তরিত হয় মাত্র। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এই সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবন করছে নতুন নতুন ডিভাইস। যা মানব কল্যানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

সোলার প্যানেলও তেমনি একটি ডিভাইস। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের অনেকে সোলার প্যানেল কি ও এর কাজ সম্পর্কে জানেন না। তাই সোলার প্যানেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে আমাদের এই ফিচারের আয়োজন!

সোলার প্যানেল হলো এমন একটি ডিভাইস যার মাধ্যমে সূর্যের রশ্মি থেকে সৌরশক্তি শোষণ করে তাপ বা বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়। অর্থাৎ, সৌরশক্তি শোষণ করে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করার ডিভাইস হচ্ছে সোলার প্যানেল(solar pannel)। তবে এই ডিভাইসটি অনেকের কাছে ফটোভোল্টাইক সেল (Photovoltaic cell) বা পিভি (PV) নামে পরিচিত।

সোলার প্যানেল কে আবিষ্কার করেন

সভ্যতার সূচনা লগ্ন থেকেই সৌর শক্তি কাজে লাগিয়ে আদিম মানুষ নানা কাজ করত। তাই সৌর শক্তির ব্যবহার নতুন কোনো প্রযুক্তি নয়। পূর্বে মানুষ আয়না ও আতশী কাচের মাধ্যমে সৌর শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করে আগুন জ্বালাতে শুরু করেন।

তবে সূর্য থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যায় না। সৌরশক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রুপান্তর করার জন্য সোলার প্যানেল বা ফটোভল্টিক এর প্রয়োজন হয়। এই সোলার প্যানেল বা ফটোভোল্টিক সূর্যের রশ্মি থেকে তাপশক্তি শোষণ করে ইলেকট্রনের প্রবাহ তৈরি করে। এই ইলেকট্রনের প্রবাহই মূলত বিদ্যুৎ শক্তির উদ্ভাবন।

সোলার প্যানেল কি? সোলার প্যানেল কিভাবে কাজ করে, এর দাম ও ব্যবহার
সোলার প্যানেল কি? সোলার প্যানেল কিভাবে কাজ করে, এর দাম ও ব্যবহার

এই সৌর শক্তিকে বিদ্যুতিক শক্তিতে রুপান্তর করা ধারনা দেয় ফ্রান্স পদার্থবিদ Edmond Becquerel। তিনি সর্বপ্রথম 1839 সালে সোলার প্যানেল আবিষ্কার করেন। এজন্য Edmond Becquerel কে সোলার প্যানেল আবিষ্কারক বলা হয়ে থাকে।

এর পরবর্তীতে, 1881 সালে চার্লস ফ্রিটস সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে সোলার প্যানেল তৈরি করেন। তবে, 1939 সালে রাসেল ওহল আধুনিক সোলার প্যানেলের ডিজাইন তৈরি করেন, যা এখন সব সোলার প্যানেলে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সোলার প্যানেলের গঠন

সোলার প্যানেল তৈরিতে ফটোভোল্টাইক কোষ( photovoltaic cells) বা পিভি কোষ (PV Cells) ব্যবহার করা হয় যা কম্পিউটারের প্রসেসরের ব্যবহৃত ওয়েফারের মত সিলিকন ক্রিস্টাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই সিলিকন ভিত্তিক সোলার প্যানেল তৈরির জন্য কোয়ার্টজ নামক কাচাঁমাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোয়ার্ট হচ্ছে বেলেপাথরের একটি রুপ। প্রথমে কোয়ার্টজকে কার্বনসহ উচ্চতাপ ও চাপে আর্ক ফার্নেসে উত্তপ করা হয়। এর ফলে ৯৯% বিশুদ্ধ সিলিকা পাওয়া যায়।

এরপর এই বিশুদ্ধ সিলিকনকে বোরন বা ফরসফরাসের ট্রেস ইলিমেন্টের মাধ্যমে ডোপিং করা হয়। এর ফলে P-টাইপ বা N-টাইপ সিলিকন হয়। এই ধরনের জাংশনকে ডায়োড বলা হয়ে থাকে। প্রায় সব ফটোভোলটাইক সেল শক্তি রূপান্তর করার জন্য একটি p-n সংযোগে অর্ধপরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করে থাকে।

এই অর্ধপরিবাহী জাংশনের উপরের অংশ খোলা থাকে এবং নিচের অংশ কভারিং আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে। ফলে উপরের স্তর অর্থাৎ P-টাইপ লেয়ারে পাতলা আবরন দিয়ে খুব সহজেই আলো জাংশনে প্রবেশ করতে পারে। একটি সোলার প্যানেলের প্রধান উপাদানগুলি হচ্ছেঃ

  • সৌর ফটোভোলটাইক কোষ
  • শক্ত গ্লাসঃ 3 থেকে 3.5 মিমি পুরু
  • এক্সট্রুড অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম
  • এনক্যাপসুলেশনঃ ইভা ফিল্ম স্তর
  • পলিমার পিছনের শীট
  • জংশন বক্স
  • ডায়োড এবং
  • সংযোগকারী

সোলার প্যানেল কত প্রকার

সোলার প্যানেল সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করে থাকে। এই সূর্যের আলোকে কাজে লাগানোর প্রদ্ধতি অনুসারে সোলার প্যানেলকে ৩ প্রকারে ভাগ করা হয়ে থাকে।

১। অন গ্রিড সোলার সিস্টেম (On Grid System)

অন গ্রিড সোলার সিস্টেম (On Grid System) সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ বিল কমাতে সাহায্য করে থাকে। যে সকল বাস বাড়িতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসে সেই সকল বাড়িতে অন গ্রিড সোলার সিস্টেমের ব্যবহার বেশি লক্ষ্য করা যায়। এই ধরণের সোলার সিস্টেমে কোন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় না। ইনভার্টারের মাধ্যমে বাড়িতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক কানেকশনের সাথে যুক্ত করে দেওয়া হয়।

এর ফলে যখনই কোন বৈদ্যুতিক ডিভাইস ব্যবহার করা হয় তখনই সোলার প্যানেল এর সাহায্যে তা চলতে থাকে। তাই এই ধরনের সোলার প্যানেল অতিরিক্ত বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে দেয়। বাড়তি বিদ্যুতের যোগান দিয়ে বিদ্যুৎ কমিয়ে দেয়।

এই ধরনের সোলার সিস্টেম শুধুমাত্র সে সকল বাড়িতে বিদ্যুৎ রয়েছে তাদের জন্যই প্রযোয্য। কেননা এই সোলার প্যানেল পরিচালনার জন্য আলাদা বিদ্যুতে প্রয়োজন হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এই বিদ্যুতের সরবারহ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত সোলার প্যানেল চলবে। আর বিদ্যুত চলে গেলে সোলার প্যানেল এর কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এই ধরনের সোলার প্যানেল এর ব্যবহার শহরের বাসা বাড়িতে বেশি লক্ষ্য করা যায়।

২। অফ গ্রিড সোলার সিস্টেম (Off Grid System)

অফ গ্রিড সোলার সিস্টেমে ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এর ফলে সূর্যের আলো থেকে শক্তি নিয়ে তা ব্যাটারিতে জমা রাখে। ইনভার্টার অথবা কনভার্টার ব্যবহার করে এই ব্যাটারি থেকে ইলেকট্রিক শক্তিতে রুপান্তর করা হয়। এর ফলে লোড শেডিং এর পরও বিদ্যুতের ব্যাকাপ দিতে পারে। এছাড়াও যে সব অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌছে নাই সেই সব অঞ্চলে এই ধরনের সোলার সিস্টেমের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

৩। হাইব্রিড সোলার সিস্টেম (Hybrid Solar System)

হাইব্রিড সোলার সিস্টেমে অফগ্রিড ও অনগ্রিড উভয় ধরনের সোলার সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের সোলার প্যানেল ব্যবহার করলে বিদ্যুতের বিলের পরিমাণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায়। পাশাপাশি লোড শেডিংয়ের সময় বিদ্যুতের ব্যাকাপ দিতে পারে। তাই বর্তমান সময়ে এই হাইব্রিড সোলার সিস্টেমের ব্যবহার বেড়ে চলছে।

সোলার প্যানেল সিলিকনের সেমিকন্ডাক্টর দিয়ে তৈরি করা হয়। বিশুদ্ধ সিলিকনের সাথে ত্রিযোজী বা পঞ্চযোজী ধাতু ব্যবহার করে ডোপিং করা হয়ে থাকে। তাই অনেকে সিলিকনের ক্রিস্টালের উপর ভিত্তি করেও সোলার প্যানেলকে ভাগ করে থাকেন। চলুন তাহলে সিলিকনের ক্রিস্টালের উপর ভিত্তি করে সোলার প্যানেল কত প্রকার ও কি কি জেনে নেওয়া যাক। সিলিকন ক্রিস্টালের উপর ভিত্তি করে সোলার প্যানেলকে ৩ ভাগে করা হয়ে থাকে। যেমনঃ

১। মনো ক্রিস্টালাইনঃ মনো ক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল প্রস্তুত করার জন্য সিলিকন সিংগেল ক্রিস্টাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর ফলে পরমানু গুলি একটি অপটির সাথে সিংগেল চেইন এর মাধ্যমে একটি অপটির সাথে অবিচ্ছিন্ন ভাবে যুক্ত থাকে। এরা অনেক অল্প আলোতেও কাজ করতে পারে। এদের ক্যাপাবিলিটি অনেক বেশি। তাই এই ধরনের সোলার প্যানেলের দাম একটু বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত মনো ক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেলগুলি কালো রঙের হয়ে থাকে।

সোলার প্যানেল কত প্রকার ও কি কি
সোলার প্যানেল কত প্রকার ও কি কি

২। পলি ক্রিস্টালাইনঃ পলি ক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল প্রস্তুত করার জন্য সিলিকন পলিক্রিস্টালাইন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ধরনের ক্রিস্টাল গুলির পরমানুর বিভিন্ন আকার ও অভিযোজন ক্ষমতা রয়েছে। এরা অল্প আলোতে তেমন বেশি কাজ করতে পারে না, এদের জন্য অত্যন্ত প্রখর রোদের প্রয়োজন হয়। তাই এদের ক্যাপাবিলিটি অনেক কম। এই ধরনের সোলার প্যানেলের দাম অনেক কম হয়ে থাকে। সাধারণত পলি ক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেলগুলি নীল রঙ্গের হয়ে থাকে।

৩। থিন ফ্লিমঃ থিন ফ্লি সোলার প্যানেলে সিলিকন ম্যাটেরিয়ালসের পাতলা ফ্লিম ব্যবহার করা হয়। এর প্রতিটি ফ্লিম এর পুরুত্ব ন্যানোমিটার (মনোলেয়ার) এর ভগ্নাংশ থেকে পুরুত্বে মাইক্রোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এই ধরনের সোলার প্যানেলের দাম অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাই এদের ব্যবহার তেমন লক্ষ্য করা যায় না।

সোলার প্যানেল কিভাবে কাজ করে

সোলার প্যানেল সিলিকন পদার্থ দ্বারা তৈরি। বিশুদ্ধ সিলিকনের সাথে ত্রিযোজী বা পঞ্চযোজী ধাতু মিশিয়ে ডোপিং করা হয়। ফলে পজিটিভ হোল ও নেগেটিভ ইলেকট্রনের তৈরি হয়। ডোপিং করার ফলে পদার্থের তড়িৎ পরিবাহীতা অনেক বেড়ে যায়।

সিলিকন পরমানু সর্ববহিঃস্তরে ৪ টি বেজোড় সংখ্যক ইলেকট্রন থাকে। তাই সিলিকন এর যোজনী সংখ্যা ৪। সাধারণত সোলার প্যানেলের উপরের স্তরটিতে পঞ্চযোজী ধাতু ফসফরাস দ্বারা ডোপায়িত হয়ে থাকে। এর ফলে এই স্তরে অতিরিক্ত ইলেকট্রনের যোগ হতে দেখা যায়। এই ধরণের সিলিকনকে N-টাইপ সিলিকন বলা হয়ে থাকে।

অন্যদিকে, দ্বিতীয় স্তরটিকে ত্রিযোজী ধাতু বোরন বা অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা ডোপায়িত করা হয়। এর ফলে এই স্তরে ইলেকট্রন হোলের সৃষ্টি হয়। ফলে এখানে ইলেকট্রনে ঘাটতি দেখা যায়। এই ধরণের সিলিকনকে P-টাইপ সিলিকন বলা হয়ে থাকে।

সোলার প্যানেল কিভাবে কাজ করে জানুন
সোলার প্যানেল কিভাবে কাজ করে জানুন

এই N- টাইপ এবং P-টাইপ মিলিত হয়ে একটি p-n জাংশন ডায়োড তৈরি করে। এই p-n জাংশন ডায়োড বা ফটোভোল্টায়িক কোষ হচ্ছে একটি সোলার প্যানেলের গঠনগত একক। তাই অনেকগুলি p-n জাংশন ডায়োড বা ফটোভোল্টায়িক কোষের মিলিত হয়ে একটি সোলার সেল গঠন করে। চলুন এই সোলার প্যানেল কিভাবে কাজ করে তা জেনে নেওয়া যাক।

সূর্যের আলো যখন সোলার প্যানেল অর্থাৎ N-টাইপ সিলিকনের উপর পড়ে তখন এর ইলেকট্রনগুলি এক্টিভ হয়ে যায়। সূর্যের আলোতে মূলত ফোটন থাকে যা শক্তি তৈরির প্রধান কাচাঁমাল ফিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ফোটন N-টাইপ সিলিকনের ইলেকট্রনের উপর আঘাত করে। এই আঘাতের ফলে ইলেকট্রন নির্গত হয়।

তড়িৎক্ষেত্রের প্রভাবে এই ইলেকট্রন জাংশনের বাইরে চলে আসে। এরপর এইগুলোকে ধাতব প্লেটে সংগ্রহ করা হয়। এই ইলেকট্রনগুলিও তারের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে। আর ইলেকট্রনের প্রবাহই হচ্ছে বিদ্যুতের প্রবাহ। সোলার সেলে ডি.সি প্রবাহের তৈরি হয়, তাই কনভার্টার বা ইনভার্টার ডি.সি. প্রবাহকে এ.সি. প্রবাহে রুপান্তর করে বাসা বাড়ির উপযোগী করা হয়।

সোলার প্যানেল এর ব্যবহার

বর্তমান যুগ আধুনিক প্রযুক্তির যুগ। এই আধুনিক প্রযুক্তির যুগের অন্যতম উপাদান হচ্ছে বিদ্যুৎ। প্রযুক্তির প্রায় সকল উপাদানই বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। যে কোন ডিভাইস পরিচালনার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ আছে যেখানে শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা সম্ভব হয় নি। এই পিছিয়ে পড়া গ্রোষ্ঠীকে আধুনিক সভ্যতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সমস্যা হতে যদি সোলার প্যানেল থাকত।

সোলার প্যানেল এর ব্যবহার শুধু বিদ্যুতহীন জনগ্রোষ্ঠী কাছে নয় বরং শহরের অতিরিক্ত লোডশেডিং পরিবেশের উপরও বিরাট ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে এখনো বিদ্যুতের ছোয়া লাগে নি সেব অঞ্চলে সোলার প্যানেল এর ব্যবহার বেশি লক্ষ্য করা যায়।

সোলার প্যানেল এর ব্যবহার
সোলার প্যানেল এর ব্যবহার

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের টেকনাফের নাফ নদীর তীরে সোলার প্যানেল পার্ক সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলছে। টেকনাফ ও উখিয়ার অঞ্চলে অধিকাংশ মানুষ এই সোলার প্যানেল এর ব্যবহার করছে। এই সোলার প্যানেল শুধু বাড়িকে আলোকিত করে না, অনেক সময় রান্নাকাজেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই সোলার প্যানেলের গুরুত্ব অপরিসীম।

সোলার প্যানেলের দাম

বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত লোডশেডিং এর কারনে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রাহকে চাহিদা কথা মাথায় রেখে ছয়টি কোম্পানি সোলার প্যানেল তৈরি করছে। এই কোম্পানিগুলিতে বিভিন্ন ওয়াটের সোলার তৈরি করা হয়ে থাকে। সাধারণত সোলার প্যানেলের দাম এই ওয়াটের উপর নির্ভর করে থাকে।

বাসা বাড়িতে কম ওয়াটের সোলার প্যানেল হলেই হয়। তবে আপনি যদি লাইটের পাশাপাশি ফ্যান, কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিভাইস চালাতে চান তাহলে বেশি ওয়াটের সোলার প্যানেল ক্রয় করতে হবে। একটি ৪ সদস্যের পরিবারের জন্য ৫০ ওয়াটের সোলার প্যানেলই যথেষ্ট।

তবে আপনি যদি ফ্যান ও অন্যান্য ডিভাইস চালাতে চান তাহলে ১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল ক্রয় করতে হবে। সেক্ষেত্রে সোলার প্যানেল এর দাম হবে ৯০০০ থেকে ১০০০০ টাকা। আপনি নগদ বা কিস্তিতে সোলার প্যানেল ক্রয় করতে পারবেন।

সোলার প্যানেল বসানোর নিয়ম

সোলার প্যানেল সূর্যের আলোর ফোটন এর সাহায্যে বিদ্যুত তৈরি করে থাকে। তাই সোলার প্যানেল এর জন্য পর্যাপ্ত আলোর নিশ্চিত করতে হবে। সব রোদ পড়ে এমন জায়গাকে সোলার প্যানেল বসানোর জন্য নির্বাচন করতে হবে। সাধারণত বেশিরভাগ বাড়িতে ঘরের চালা বা ছাদের উপর সোলার প্যানেল বাসাতে দেখা যায়। এসব জায়গায় দীর্ঘ সময় রোধ থাকে। ফলে সোলার প্যানেলের অধিক ফোটন শোষন করতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে সোলার প্যানেল যেন ৩৫ ° কোনে দক্ষিণমুখী করে বসানো হয়। এর ফলে শীত কিংবা গ্রীষ্ম উভয় সময় সূর্যের আলো পড়বে।

শেষকথাঃ

আশাকরি, আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনার মনে যে প্রশ্ন ছিল, সোলার প্যানেল কি? কিভাবে এটি কাজ করে এর উত্তর পেয়েছেন। সোলার প্যানেল প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও এই যন্ত্রটি অত্যন্ত পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় সকলের কাছে গ্রহনযোগ্যতা লাভ করছে। যদিও এর কিছু অসুবিধা রয়েছে তবে সুবিধার দিক গুলি বিবেচনা করলে সোলার প্যানেল এর অবদান অপরিসীম।




Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button