মেছতা দূর করার ক্রিম এর নাম ও ব্যবহার

মেছতা দূর করার ক্রিম এর নাম সম্পর্কে জানুনঃ আপনি কি মুখের মেছতা সমস্যা নিয়ে চিন্তিত? আপনার সুন্দর চেহারা মেছতার কারনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে? তাহলে মেছতা দূর করার ক্রিমের নাম ও ব্যবহার জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
নারী ওপুরুষের খুবই কমন একটি সমস্যার নাম হচ্ছে মেছতা। মেছতার কারনে আপনার সুন্দর চেহারাও বিশ্রী দেখা যায়। তবে ত্বকে মেছতা পড়ার সাথে সাথে মেছতা দূর করার ক্রিম ব্যবহার করলে এর সমস্যার সমাধান করা যায়।
মেছতা কি?
মুখের মধ্যে যে কাল বা বাদামি ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায় তাই মূলত মেছতা। মেছতার শুধু যে মুখেই হবে তা নয়। মুখ ছাড়াও অন্যান্য জায়গা যেমনঃ হাত, থুতনি, কপাল, নাক এমন কি বুকের উপরও মেছতা হতে পারে।
তাই মেছতার শরীরের কোথায় হচ্ছে এর উপর ভিত্তি করে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমনঃ
- সেন্ট্রোফেসিয়াল মেছতাঃ সেন্ট্রোফেসিয়াল মেছতা মুখ, কপাল, নাক, থুতনিতে হয়ে থাকে। মেয়ে ও ছেলেদের এই প্রকাররের মেছতা বেশি দৃশ্যমান হয়। সেন্ট্রোফেসিয়াল মেছতার কারনে ত্বকের সৌন্দর্য্য বেশি নষ্ট হয়। তবে মেছতা দূর করার ক্রিম এর নাম ও ব্যবহার জানলে দ্রুত রিমুভ করা যায়।
- ম্যালার এরিয়া মেছতাঃ শুধু নাক ও গালের মধ্যে যে এক ধরনের মেছতা দেখা যায় তাকে ম্যালার এরিয়া মেছতা বলে। এই ধরনের মেছতা শুরুর দিকে ছোট আকারের হয়ে থাকে, পরে চারদিকে ছড়িয়ে যেতে থাকে।
- মেন্ডিবুলার এরিয়া মেছতাঃ আপনাদের অনেকে হয়ত লক্ষ্য করেছেন, থুতনির নিচেও এক ধরনের মেছতা দেখা যায়। থুতনির নিচের হওয়ায় সহজে চোখে পড়ে না। তবে যখন আস্তে আস্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন সহজেই বুঝা যায়।

আপনাদের পূর্বেই বলেছি মেছতা শুধু নাক,মুখ ও থুতনিতে হবে এমন নয়। কিছু কিছু ছেলে মেয়েদের শারীর বা ত্বকের অন্যান্য জায়গায় মেছতা হতে দেখা যায়। এই মেছতা ত্বকের উপরে কিংবা ভেতরে অথবা উভয় অংশে হতে পারে। যদি ত্বকের উপরে মেছতা হয় তাকে এপিডার্মাল মেছতা এবং ত্বকের ভেতরে মেছতা হলে ডার্মাল মেছতা বলে । আর যদি ত্বকের উপরে ও ভেতরে উভয় জায়গার মেছতা তাকে মিক্স ডার্মাল মেছতা বলে।
মেছতা কেন হয়?
মেছতা কেন হয় বা মেছতা হওয়ার কারন কি? এই ধরনের প্রশ্ন সবার মনে জাগে। মেছতা হওয়ার কোন সুনির্দিষ্ট কারন চিহ্নিত করা না গেলেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা কিছু কিছু কারনকে মেছতা হওয়ার জন্য দায়ী করেছেন। নিচে কারনগুলির বিস্তারিত ধারনা দেয়ার চেষ্টা করব।
সূর্যের আলোঃসূর্যের অতি ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মি ছেলে ও মেয়েদের মেছতা হওয়ার প্রধান কারন বলে মনে করা হয়। যখন ত্বক সূর্যের আলোর অতি ক্ষতিকর রশ্মি শোষণ করতে পারে না, তখন ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় এক ধরনের কালো কালো দাগ দেখা যায়। আসলে এই কালো কালো দাগগুলোই মেছতা।
জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলঃ মেয়েদের ক্ষেত্রে মেছতা হওয়ার প্রধান কারন হিসেবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলকে দায়ী করা হয়ে থাকে।যে সকল নারীরা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা ইঞ্জেকশন নেন তাদের মেছতা হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
সন্তান প্রসবের পরঃ অনিদ্রা, সন্তান প্রসব পর কিছু কিছু মেয়েদের ত্বকে মেছতা পরে থাকে। তবে মেছতা দূর কারার ক্রিমের এর নাম ও সঠিক ব্যবহার জানলে দূর করা সম্ভব।
হরমোনঃঅনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মেছতা হওয়ার অন্যতম কারন হিসেবে হরমোন দায়ী বলে মনে করেন। সাধারনত শরীরে হরমোনের ইমব্যালেন্স এর কারনে মেছতা হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাইরয়েড হরমোনের কারনে ত্বকে মেছতার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
মেছতা দূর করার উপায়
শুধুমাত্র ক্রিম নয় প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে মেছতা দূর কারা যায়। মেছতা যদি শুধুমাত্র এপিডার্মালে অবস্থান করে। তাহলে প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে সহজেই মেছতা দূর করা সম্ভব। আপনার ঘরে থাকা জিনিস ব্যবহার করেই মেছতা দূর করতে পারবেন। চলুন তাহলে প্রাকৃতিক উপায়ে মেছতা দূর করার উপায় জেনে নেই।
লেবু ও মধুর প্যাকঃ কমবেশি সবার বাড়িতে লেবু থাকে। লেবুর প্যাক মেছতা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ ত্বকে সকল প্রকার দাগ, ছোপ পরিষ্কার করে দেয়। লেবু ও মধুর প্যাক তৈরি কারার জন্য প্রথমে লেবু স্লাইজ করে কেটে নিতে হবে।
এরপর হাল্কা কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশ্রিত করে নিতে হবে। লেবু ও মধু মিশ্রণটি ভাল্ভাবে মিশিয়ে ত্বকের যে সকল জায়গায় মেছতা বা বিভিন্ন দাগ রয়েছে সে সব জায়গায় স্ক্র্যাব করে নিতে হবে। ১০থেকে ১৫ মিনিট এই স্ক্র্যাব রাখাতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এভাবে ১৫থেকে২০ দিন ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
অ্যালোবেরাঃ ত্বকের মেছতা দূর করতে অ্যালোবেরা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে। রাতে ঘুমানোর পূর্বে অ্যালোবেরার রস মুখে মাখলে বিভিন্ন দাগসহ, মেছতা দূর হয়ে যায়। তাই মেছতা দূর করতে ঘুমানোর ত্বকের যে সব জায়গায় মেছতা হয়েছে অ্যালোবেরা ব্যবহার করুন।
সানব্লকঃ সানব্লক ছাড়া মেছতার ট্রিটমেন্ট করা সম্ভব না। চিরতরে মেছতা দূর করতে হলে আপনি যাই ব্যবহার করুন না কেন সানব্লক করতেই হবে। ত্বক থেকে মেছতা দূর করতে হলে প্রথমে আল্টাভায়েলেট রশ্মিকে প্রতিরোধ করতে হবে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। প্রত্যেক ২-৩ ঘণ্টা পর পর সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। কেননা সানব্লকের কার্যকারিতা ২-৩ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করে । এরপর পানি দিয়ে ফেসটাকে ধুয়ে কিংবা টিস্যু পেপার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে পুনরায় সানব্লক ব্যবহার করতে হবে।
কোন কারনে যদি ত্বকের এপিডার্মাল এরিয়া থেকে মেছতা ত্বকে ড্রার্মাল বা মিক্সড ডার্মাল এরিয়াতে মেছতা হয় । তাহলে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করার পাশাপাশি মেছতা দূর কারার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে অল্প সময়ে ভাল ফলাফল পাওয়া সম্ভব।
মেছতা দূর করার ক্রিম এর নাম
আজকের আর্টিকেলটি মূলত মেছতা দূর কারার ক্রিম এর নাম নিয়ে। আপনাদের মধ্যে যারা পুরাতন মেছতা বা Melasma নিয়ে সমস্যায় আছেন তাদের জন্য এই পোষ্টি কাজে আসবে। বাজার থেকে অনেক ক্রিম ব্যবহার কারার পরও যারা মেছতা দূর করতে পারেন নি তাদের জন্য P-Vita , Melasma cream অনেক কাজে আসবে। এই ক্রিমটির বাজার মূল্য ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকার মত হয়ে থাকে।

কিন্তু আপনি যদি https://gazivai.com/product/mesta-dur-korar-cream-er-nam এই ওয়েবসাটি থেকে পণ্যটি ক্রয় করেন তাহলে ৬৫০ টাকায় মধ্যে কিনতে পারবেন। এই ক্রিম নিয়মিত ৭-১৫দিন ব্যবহার করলে আপনার মেছতা চিরতরে চলে যাবে। এই ক্রিমটি ব্যবহারে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। ক্রিমটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারবেন। মেছতা দূর কারার পাশাপাশি আপনার ত্বককে সুন্দর ও আকর্ষনীয় করে তোলবে।
মেছতা দূর করার ক্রিমের নাম
P-Vita , Melasma creamক্রিম ছাড়াও বাজারে আরও এক ধরনের ক্রিম পাওয়া যায়। এই ক্রিমটি word wide পরিচিত এবং এফবিএ কর্তৃক এপ্রোপ একটি ক্রিম। বেসিকালি এই ক্রিমটি মেছতা ও হাইপার পিগমেন্টেশন এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। মেছতা দূর করার ক্রিমের নাম হচ্ছে skin clinic melanyc cream।

যেহেতু ক্রিমটিতে স্ক্রিনের খুব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এই ক্রিমটিতে আছে , ত্বকের মেছতা দূর করতে ক্রিমটি খুবই কার্যক্ররী । ক্রিমটি word wide পরিচিত এবং এফবিএ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ায় দাম একটু বেশি।
মেছতা দূর করার ক্রিম এর ব্যবহার
দিনের বেলা মেছতা দূর করার ক্রিম এর ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির সাথে ক্রিয়া বিক্রিয়া করে ত্বকে ক্ষতি করতে পার। এতে হিতের বিপরীত হবে। তাই রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
আর সকালবেলা ত্বকে সূর্যের আলো পরার পূর্বেই ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। এভাবে নিয়মিত ৭- ১৫দিন মেছতা দূর কারার ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার ত্বক সুন্দর ও আর্কষনীয় হয়ে উঠবে।
মেছতা দূর করার ঔষধ
আমাদের ত্বক খুবই সেন্সেটিভ জায়গা। যে কোন ঔষধ ব্যবহার বা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণ ঔষধের দোকান থেক ঔষধ না নিয়ে ভাল স্কিন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তার আপনার মেছতার ধরন ও স্কিনের উপর ভিত্তি করে মেছতা দূর করার ঔষধ দিবেন।
- আরও পড়ুনঃ সেরা ১০টি ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
পরিশেষে ,
মেছতা হয়ে গেছে এটা নিয়ে ভয় পেয়ে যাওয়ার কোন কারন নেই। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে মেছতা দূর করা সম্ভব। যদি প্রাকৃতিক উপায়ে মেছতা দূর না হলে উপরে দেয়া মেছতা দূর করার ক্রিম এর নাম থেকে আপনার পছন্দ মত যে কোন ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এরপরও যদি মেছতা দূর না হয় তাহলে এডভ্যান্স লেজার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে মেছতা দূর করতে পারবেন।