প্রযুক্তি

৯টি মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ ও মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়

প্রিয় পাঠক আপনি কি জানেন,মানসিক রোগ কি? মানসিক রোগের লক্ষণ কি কি? এবং এই রোগ থেকে মুক্তির উপায় কি? এই সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

বর্তমান বিশ্বে দিন দিন মানসিক রোগির সংখ্যা বেড়েই চলছে। মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পাওয়া মাত্রই সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন। যদি সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হয় পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। এমনকি রোগী মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়তে পারে। 

মানসিক রোগ নিয়ে উদাসীন না হয়ে এর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। সুস্থ্য ও সুন্দর জীবন যাপন করার জন্য মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই আজকের এই আর্টিকেলটিতে মানসিক রোগ ও মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকার উপায় নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়ার চেষ্টা করব। 

মানসিক রোগ কি?

মানসিক রোগ বা মনোরোগটি ইংরেজিতে mental disorder নামে পরিচিত। মানসিক রোগ কি জানার আগে আমাদের জানতে হবে মন কি? মন বলতে মানুষের ব্রেইন বা মস্তিষ্কের কার্যকালাপকে বুঝিয়ে থাকে। তবে কথা হল মনটাকে কিন্তু দেখা যায় না। তবে যেটা মজার ব্যাপার সেটা হল মনকে দেখা না গেলেও আমাদের নানা রকম ব্যবহারের মাধ্যমে বুঝা যায় বা রিফ্লেক্ট করে মন কি অবস্থায় রয়েছে, সেটা অনুভব করা যায়।

অর্থাৎ কারও মন যদি খুশি থাকে, আচার আচরন, পোশাক পরিচ্ছদের পরিপাটি ও অন্যান্য মানুষের সাথে ইন্টারেকশনের মাধ্যমে প্রকাশ পাবে। পক্ষান্তরে, মন যদি খারাপ থাকে অস্বাভাবিক আচরণ, এলোমেলো জীবনযাপন ও অন্যান্য মানুষের সাথে ইন্টারেকশন সঠিকভাবে হবে না। মনের এই পরিস্থিতিকেই মানসিক রোগ বা মনোরোগ বলে সজ্ঞায়িত করা হয়ে থাকে।


মানসিক রোগ পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে নানা জটিলতার সৃষ্টি করে থাকে। এই  রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পাওয়া মাত্রই ভাল চিকিৎকের শরনাপন্ন হতে হবে।

মানসিক রোগের প্রকারভেদ

পূর্বে মানসিক রোগ নিয়ে ভ্রান্ত ধারনা ও বিশ্বাস ছিল যে মানসিক রোগ মানেই পাগল। এই ভ্রান্ত ধারনা বর্তমানেও আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। আসলে অনেক ধরনের মানসিক রোগ রয়েছে।

মানসিক রোগের প্রকারভেদ করতে গেলে নানাভাবে একে বিন্যাস করা যায়। মনোরোগ চিকিৎসকের মতে মানসিক রোগকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ ১) লঘু মানসিকরোগ বা স্বল্প মানসিক রোগ এবং ২) গুরু মানসিক রোগ বা অধিক মানসিক রোগ। পুরো মানসিক রোগের ৮০ ভাগ লোক  লঘু বা স্বল্প মানসিক রোগে ভোগে। আর বাকি ২০ ভাগ লোক গুরু মানসিক রোগে ভোগে থাকে। 

সাধারন লোকের মধ্যে ধারনা আছে সে গায়েবি কথা শোনে, কিছু দেখছে, সে যে কাজ করত: স্বাভাবিকভাবে  আজকাল সে করতে পারছে না; এই সমস্ত উপসর্গগুলো হচ্ছে গুরু মানসিক রোগের লক্ষণ। অন্যদিকে বারবার একই চিন্তা আসছে ঘুরে ফিরে, এসব নিয়েও দৈনন্দিন কাজকর্ম করছে এই উপসর্গগুলি হচ্ছে লঘু মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ। 

মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ

একজন মানসিক রোগীর যে শারীরিক লক্ষণ  থাকে তাকে বলা হয় সোমাটিক সিমট্রমস ডিজঅর্ডার। অর্থাৎ এই রোগগুলোতে কিছু ব্যাখ্যাবিহীন শারীরিক উপসর্গ থাকে। যে শারীরিক উপসর্গগুলো কোন রোগের সাথে মেলানো যায় না।

 মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে যদি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া যায় এর সমাধান করা সম্ভব। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে মানসিক রোগের উপসর্গ বা লক্ষণমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ

দুঃখ কিংবা বিষন্নতা অনুভব করাঃ জীবনের বিভিন্ন সময় নানা দুঃখ কষ্টের মধ্য  দিয়ে আমাদের সবাইকে যেতে হয়। সাধারণত কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে দুঃখের অনুভূতি আমরা সময়ের সঙ্গে কাটিয়ে উঠতে পারি। দ্যা আমেরিকান সাইক্রেটিক অ্যাসোসিয়েশন মতে দুই সপ্তাহ কিংবা তার বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিক রকমের তীব্র দুঃখবোধ অনুভব করা ডিপ্রেশনের একটি লক্ষণ হতে পারে।

দ্যা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ বলছে কোনভাবেই দুঃখবোধ থেকে বের হয়ে আসতে না পারা  কিংবা দুঃখবোধটা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি ভারি মনে হওয়াকে অবশ্যই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

তীব্র  মুড সুইং হওয়াঃ  তীব্র মুডসুইং হওয়া, কেন হচ্ছে তা বুঝতে না পারা মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ এর মধ্যে অন্যতম একটি উদাহরণ। এমন কি কখনো হয়েছে হঠাৎ করে আপনার মুড বদলে যাচ্ছে কিন্তু কখন এবং কেন এমন হচ্ছে আপনি নিজেও বুঝতে পারছেন না।

গবেষণা থেকে জানা যায় মানুষ সাধারণত বিষন্নতা বা দুঃখবোধের মতো নেগেটিভ অনুভূতির চেয়ে হাসি আনন্দের পজেটিভ অনুভূতি বেশি অনুভব করে থাকে। আর মানুষের সুখ দুঃখের অনুভূতি প্রতিদিনই  বদলাতে থাকা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু কয়েক মুহূর্তেই আপনার আচরণ বদলে ফেলার নাটকীয়  মুড সুইং সতর্ক হতে বলেছে দ্যা ন্যাশনাল এলাইন অন মেন্টাল ইলনেস। তাদের মতে এটি বাইপোলার ডিজঅর্ডারের লক্ষণ হতে পারে।

 অ্যামেরিকান একাডেমি অব প্যাডিয়াটিক্স জানিয়েছেন আরও একটি বিপদজ্জনক লক্ষণের কথাঃ দিনের বেশিরভাগ সময় একের পর এক রাগ, দুঃখ কিংবা অকারনে উচ্ছ্বাসবোধ অনুভূব করতে থাকা বিশেষ করে যদি আপনার জীবনে যা কিছু চলছে তার সাথে অনুভূতির কোন সম্পর্কই না থাকে, তাহলে আপনার একটু সতর্ক হতে হবে। 

কারও সাথে মিশতে না চাওয়াঃ কাছের কিংবা পরিচিত কারও সাথে সময় কাটানোর আপনার শারীরিক ও মানসিক দুই ধরনের স্বাস্থ্যের জন্যই ভাল।  কিন্তু যদি এমন হয় যে প্রতিনিয়তই আপনি  বিভিন্ন অযুহাতে যে কারও সজ্ঞে মেলামেশ, দেখা সাক্ষাৎ বা যে কোন ধরনের সোশিয়্যালাইজিং থেকে দূরে থাকছেন।

 মেন্টাল হেলথ বিশেষজ্ঞরা বলছেন যাদের সজ্ঞে আপনি দেখা সাক্ষাৎ কিংবা মেলামেশা করতে পছন্দ করতেন, তাদের এড়িয়ে চলার প্রবণতা বৃদ্ধি মানসিক রোগের লক্ষণ সমূহের মধ্যে পরে।

ডিল্যুশন বা হ্যালোসিনেশনঃ বিশেষজ্ঞরা সাইকোসিসের দুটি দিক সম্পর্কে বলেছেনঃ ১) ডিল্যুশন ও ২) হ্যালোসিনেশন। কোন উপলব্ধি কিংবা বিশ্বাসের কারনে এমন কিছুর অভিজ্ঞতা হওয়া যা বাস্তবে ঘটছে না বা ঘটে নি।

 এমনকি সেই বিশ্বাস বা উপলব্ধিটা আসলে সত্যি নয় এমন প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও অ্যামেরিকার  দ্যা ন্যাশনাল এলাইন অন মেন্টাল ইলনেস জানিয়েছেঃ প্রতি বছর অ্যামেরিকার ১ লাখেরও বেশি মানুষ সাইকোসিসে ভোগে। তারা আরও জানায় এমন এই মানসিক রোগের লক্ষণ সমূহ শতকরা ৩ জন লোকের সিজোফ্রেনিয়া বা সিজোঅ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডারে রূপ নিতে পারে। 

দৈনন্দিন সমস্যাঃ দৈনন্দিন জীবনের  বিভিন্ন স্বাভাবিক সমস্যাগুলো সামলানো খুব কঠিন লাগতে পারে। আপনার জীবনে কি এমন কোন সময় এসেছে যখন মনে হয়েছে কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না কিংবা কিছুই সামলাতে পারছেন না।

 দ্যা  অস্টেলিয়ান গভার্নমেন্ট ডিপার্ট্মেন্ট অব হেলথ বলছে, এমন খারাপ সময় যা আপনি কোনভাবে কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বরং তা ১ সপ্তাহের থেকে দুই মাসের সময় ধরে আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মের বাধা সৃষ্টি করছে। টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে যদি দৈন্দিন জীবনের বিভিন্ন স্বাভাবিক পরিস্থিতি সামলানো আপনার কাছে যদি খুব  কঠিন মনে হয় তাহলে তা সাধারন মন মেজাজ খারাপের চেয়ে বেশি কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মানসিক রোগের লক্ষণ

৯টি মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ ও মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
৯টি মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ ও মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়

খুব বেশি অথবা কম ঘুমানোঃ দ্যা হার্ভাড মেডিসিন স্কুল জানিয়েছেনঃ মোট জনসংখ্যার (১০-১৮) % মানুষের ঘুমের সমস্যা রয়েছে। তবে মানসিক অসুস্থতায় ভোগছেন, কারও স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশি ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা (২-৩)গুন বেশি হতে পারে।

 হার্ভাডের মেডিসিন স্কুল আরও বলছেন ডিপ্রেশন, এনজাইটি,বাইপোলার অসুস্থতায় ভোগা রোগীদের মধ্যে ৫০% ইনসোমনিয়া বা হাইপারসোমনিয়ায় ভোগে থাকেন।

ড্রাগ বা অ্যালকোহলে আসক্ত হওয়াঃ বিশেষজ্ঞরা বলছেন মানসিক রোগে নিয়ে ভোগতে থাকা ২৫ শতাংশ ড্রাগ বা অ্যালকোহলে আসক্ত থাকতে দেখা যায়। এরা রাগ, অবসাদ কিংবা কোন আসক্তি সামাল দেয়ার জন্য অ্যালকোহল বা কোন ড্রাগসের ব্যবহার করে থাকেন। তাদের মতে ডিপ্রেশন, এনজাইটি ডিজঅর্ডার, পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার ও সিজোফ্রেনিয়ায় ভোগা মানুষদের মধ্যে অ্যালকোহল ও ড্রাগ ব্যবহারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। 

হুটহাট রেগে যাওয়াঃ আপনার কি মাঝে মধ্যে এত বেশি রাগ হয়, যা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়? অথবা পরিস্থিতির  তুলনায় যে রাগের মাত্রা অস্বাভাবিক রকমের বেশি হয়, এই অস্বাভাবিক রেগে যাচ্ছেন। তাহলে এটিকে আপনার ভেতরে থাকা তীব্র মানসিক চাপ সুপ্ত বিষাদ বা এনজাইটি ডিসঅর্ডারের সতর্কতার সংকেত হিসেবে ধরা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন এমন সব রাগের বিষফোড়ন মূলত পুরনো অমিমাংসিত ট্রমা বাইপোলার ডিজঅর্ডার, অ্যালকোহল অ্যাবইউজ, অফসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার কিংবা ডিপ্রেশনের লক্ষণ হতে পারে। 

আত্মহত্যার প্রবণতাঃ অ্যামেরিকার মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশনের মতে ৩০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিদের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষই নিজেকে আঘাত করা বা আত্মহত্যার করার কথা ভাবে। এমন ইচ্ছা হওয়ার বিভিন্ন কারন থাকতে পারে। যেমনঃ বাসায় কিংবা কাজের জায়গায় অবহেলা, নির্জাতনের স্বীকার হওয়া ও গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছু হারিয়ে ফেল।

 ট্রমা এমন মানসিক বিপর্যয় যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। গবেষকরা মনে করেন আত্মহত্যা করেছেন এমন লোকের শতকরা ৯০ ভাগই বাইপোলার ডিজঅর্ডার বা ডিপ্রেশনের মত অসুস্থতায় ভোগছিলেন। 

আপনি যদি কখনো নিজেকে আঘাত করা কিংবা আত্মহত্যা করার ইচ্ছার টের পান, নিজেকে সাহায্য করতে নিজের ভালোর জন্যই খুব দ্রুত আপনাকে একজন মেন্টাল হেলথ প্রফেশনালের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।

মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়

বর্তমান সময়ে মানসিক চাপে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এই রোগটি হোক পরিপার্শ্বিক , দুশ্চিন্তা কিংবা পারিবারিক। এই সমস্যাগুলি দিন দিন বাড়তে থাকলে মানুষ মৃত্যুর দিকে ধাপিত হতে পারে। তাই মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

 কাজে ব্যস্ত থাকাঃ মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পেতে নিজেকে সব সময় কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। এই কাজ হতে পারে সামাজিক বা প্রফেশনাল। প্রতিদিন নির্দিষ্ট রুটিন মাফিক কাজ করতে হবে। 

মেডিটেশনঃ মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করা সম্ভব। মেডিটেশন  মাধ্যমে এলোমেলো মনকে মনোনিবদ্ধকরণের মাধ্যমে মনোযোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়।

মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়

 

শারীরিক ব্যায়ামঃ শারীরিক ব্যায়মের মাধ্যমে দেহ ও মনের উন্নতি করা যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা যেতে পারে। 

খাবারঃ পরিমিত পরিমাণে সুষম খাদ্য, শাক – সবজি জাতীয় খাবার খেতে হবে। এর পাশাপাশি ঝাল, পেটে গ্যাস হয় এমন খাবার পরিহার করতে হবে। 

ভ্রমণঃ বন্ধু বান্ধব বা ফ্যামিলির সাথে ভ্রমন করলে মন ফ্রেশ থাকে। তাই ছুটির দিন বা অবসর সময়ে দেশ বিদেশের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করা, সহজে মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় হতে পার। 

ঘুমঃ অতিরিক্ত ঘুম অথবা কম ঘুম নানাবিধ মানসিক চাপের কারন হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। 

বদ অভ্যাস পরিহারঃ ধুমপান , মদ্যপান – অ্যালকোহল সেবনের মত বদ অভ্যাস থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে।

মানসিক রোগের ঔষধের নাম

পূর্বে মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পেলে জিন-ভূতের আছর, জাদু- টোনা, তাবিজ করার কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করা হতো। মানসিক রোগের চিকিৎসার নামে তেল পড়া, পানিপড়া ছাড়াও ঝাড়ফুঁক কিংবা শিকল থেরাপির মাধ্যমে নির্যাতন করা হত।

 চিকিৎসাবিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতির কারনে মানসিক রোগের ডাক্তারি চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সারিয়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে। মানসিক রোগের ঔষধের নাম হিসেবে কিউপেক্স ২০০ এমজি ব্যবহার করা হয়। 

অনেকের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে মানসিক রোগের ঔষুধ সেবনে ব্রেইনের ক্ষতি হয়, অর্থাৎ ব্রেইন স্বাভাবিকভাবে তার কাজ করতে পারে না। তবে ঔষুধ ছাড়াও কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে মানসিক রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব! সেক্ষত্রে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নির্ধারন করবেন, যাতে তাকে সুস্থ করা যায়।  

মানসিক রোগের সমাধান

অতিরিক্ত টেনশন, উদ্বেগ এবং  হতাশা এক ধরনের মানসিক রোগ। একে এনজাইটি ডিজর্ডারও বলা হয়। যারা এই ধরনে সমস্যায় ভোগছেন, তারা অনেক ছোট বিষয়গুলোকে অনেক বড় করে দেখেন। এবং যে কোন ব্যাপারে ইতিবাচক দিক না পেয়ে নেতিবাচন চিন্তা করেন।

তবে এই ধরনের মানসিক রোগের সমাধান দলগত বা টিমওয়ার্কের মাধ্যমে করা যায়। রোগীকে যে ঔষুধ দেওয়া হয় তা কাজ করে নিউরোট্রান্সমিটারের উপর। কাউন্সিলিং বা টিমওয়ার্কের মাধ্যমে মানসিক রোগের স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব হয়। এছাড়াও এর সমাধানে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যেতে পারে, যা আমাদের বডি, ব্রেইন, মাইন্ডকে রিলাক্স করবে। 

পরিশেষে,

আজকের আর্টিকেলটিতে মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। শুধু মাত্র একটি লক্ষণ দেখে একজন ব্যক্তিকে মানসিক রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। একটি জিনিস বার বার চিন্তা করা, আমি হয়তো মরে যাব, আমার দ্বারা কিছুই হবে না, হঠাৎ করে রেগে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ যদি আপনার থাকে; তাহলে শুরুতেই সচেতন হতে হবে। মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে নিজেকে ভাল কাজে ব্যস্ত রাখা, ভ্রমণ করা , মেডিটেশন ও শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button