প্রযুক্তি

অপটিক্যাল ফাইবার কি? বৈশিষ্ট্য, গঠন, প্রকারভেদ, সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ

প্রিয় পাঠক আপনি কি জানেন, অপটিক্যাল ফাইবার কি? এবং কেন অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয়? এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি আপনি সমস্ত উত্তর পেয়ে যাবেন। এছাড়া এই ফিচার পোস্টে, ফাইবার কিভাবে কাজ করে এবং এর বৈশিষ্ট্য, গঠন, প্রকারভেদ, সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে জানাতে আমাদের এই ফিচারের আয়োজন!

অপটিক্যাল ফাইবার কি

বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির এই যুগে মহূর্তের মধ্যে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তথ্য আদান- প্রদান ও খবর নেওয়া সম্ভব হচ্ছে ডাটা ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে। ডাটা ট্রান্সমিশনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্যাবলের প্রয়োজন হয়ে থাকে। এই ডাটা ট্রান্সমিশন ক্যাবল হচ্ছে মূলত অপটিক্যাল ফাইবার।

ক্যাবলের তৈরির উপাদান, গঠন ও তার ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল তৈরি হয়ে থাকে। আর অপটিক্যাল ফাইবার হচ্ছে বিশেষ ধরণের ক্যাবল। প্রিয় পাঠক আপনাদের অনেকের অপটিক্যাল ফাইবার কি এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। তাই আলোচনার শুরুতেই অপটিক্যাল ফাইবার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

অপটিক্যাল ফাইবার হচ্ছে ডাই ইলেকট্রিক পদার্থ ( গ্লাস, সিলিকা) দিয়ে তৈরি এক গুচ্ছ কাচনল। যার ভিতর দিয়ে আলোর পূর্ণঅভ্যন্তরীন প্রতিফলন ঘটে। এই পূর্ণঅভ্যন্তরীন প্রতিফল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তথ্যবহুল ডাটা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে। এর ফাইবার কোন প্রকার ডাটা লস ছাড়াও উচ্চগতির মাধ্যমে ডাটা করে থাকে। তাই বর্তমান সময়ে এটি খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

অপটিক্যাল ফাইবার আবিষ্কারের ইতিহাস

মানুষ প্রতিনিয়তই বিভিন্ন নতুন নতুন জিনিসের উদ্ভাবন করছে। প্রয়োজন যেখানে প্রধান ফোকাস আবিষ্কার সেখানে কঠোর পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তি। একটি নতুন জিনিস উদ্ভাবন করতে বহু সময়ের প্রয়োজন হয়। অতিক্রম করতে হয় নানা প্রতিবন্ধকতা। তাই অপটিক্যাল ফাইবার আবিষ্কার অনেক কষ্ট ও সাধনার ফল।

১৮৪০ সালে জ্যাকিস বেবিনেট এবং ডেনিয়েল কোলাডন নিরলশ পরিশ্রমের মাধ্যমে সর্বপ্রথম প্রতিফলনের মাধ্যমে আলোক প্রেরণ এর ধারণা আবিষ্কার করেন। ১৮৫২ সালের মাঝামাঝি সময়ে জন টিন্ডাল এই বিষয়ে তার ধারণা ব্যাখা করেন। তার এই তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে জন লগি বেয়ার 1925 সালে টেলিভিশন আবিষ্কার করেছিলেন। পরবর্তীতে পদার্থবিজ্ঞানী নরিন্দর সিং কাপানি জন টিন্ডালের পরীক্ষাগুলির উপর ভিত্তি করে প্রথম অপটিক্যাল ফাইবার তারের উদ্ভাবন করেন।

অপটিক্যাল ফাইবারের গঠন

অপটিক্যাল ফাইবার প্রস্তুতের প্রাধান উপাদান হচ্ছে গ্লাস বা কাচঁ যা সোডিয়াম বোরোসিলিকেট, বোরন সিলিকেট বা সোডালাইম কাচঁ যা আলোর প্রতিফলনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ফাইবার তন্তুগুলি অত্যন্ত সূক্ষ্ণ চুলের মত হয়ে থাকে। অপটিক্যাল ফাইবারের প্রধানত ৩ টি অংশ থাকে। যথাক্রমেঃ কোর, ক্ল্যাডিং এবং জ্যাকেট।

অপটিক্যাল ফাইবার কি বৈশিষ্ট্য, গঠন, প্রকারভেদ, সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
অপটিক্যাল ফাইবার কি বৈশিষ্ট্য, গঠন, প্রকারভেদ, সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ

ফাইবারের সব থেকে ভিতরের স্তরটিকে কোর বলে। এই কোর অংশটি ডেটা পরিবহন করে থাকে। সাধারণত এর ব্যাস ৮ থেকে ১২৫ মাইক্রোন। কোরের ঠিক বাইরের স্তরটি ক্ল্যাডিং নামে পরিচিত। এটি ধাতব পদার্থ দ্বার তৈরি যা কোরের ভেরতের আলোকে বাইরে আসতে বাধা প্রদান করে। কোর ও ক্ল্যাডিংকে রক্ষা করার জন্য এক ধরনের প্লাস্টিকের আবরণ ব্যবহার করা হয় যা জ্যাকেট নামে পরিচিত।

অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার

অপটিক্যাল ফাইবার ডাটা ট্রান্সমিশনের অন্যতম মাইলফলক। মহূর্তের মধ্যে ডাটা আদান প্রদান করার ক্ষেত্রে এর অবদান অপরিসীম। নিরাপদ যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সাধারণত ফাইবারের গাঠনিক উপাদানের প্রতিসরাঙ্কের উপর ভিত্তি করে  ITU (International Telecommunication Union) অপটিক্যাল ফাইবারকে ২ টি ভাগে ভাগ করেছে।

১। স্টেপ ইনডেক্স ফাইবারঃ স্টেপ ইনডেক্স ফাইবারের কোরের ব্যাস অনেক বেশি থাকে এবং এর ভিতর দিয়ে আলোর প্রতিসরাঙ্ক সর্বদা সমান থাকে। সাধারণত এই ধরনের ফাইবার কম ব্যয়বহুল এবং তৈরি করা অধিক সহজতর। এই ফাইবারগুলি দীর্ঘ দূরত্বের টেলিযোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

২। গ্রেডেড ইনডেক্স ফাইবারঃ এই ধরনের ফাইবারের কোরের ব্যাস ব্যাসার্ধ বরাবর ক্রমশ কমতে থাকে এবং এর কোরের কেন্দ্রে আলোর প্রতিসরাঙ্ক অনেক বেশি থাকে। সাধারণত এই ধরনের ফাইবার এক বেশি ব্যয়বহুল এবং তৈরি করা অধিক জটিল। তবে এটি ইন্টারমোডাল ডিসপারসন কমিয়ে স্টেপ-ইনডেক্স ফাইবারের চেয়ে ভালো অপ্টিক্যাল পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে। সাধারণত এই ফাইবারগুলি স্বল্প দূরত্বের কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

অপটিক্যাল ফাইবারকে ক্যাবল নেটওয়ার্কের প্রধান অবকাঠামো বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। ফাইবারের ভিতর আলো পরিবহনকারী অংশটিকে মোড নামে পরিচিত। অনেক সময় মোডের উপর ভিত্তি করে অপটিক্যাল ফাইবারকে ভাগ করা হয়ে থাকে। চলুন তাহলে মোডের উপর ভিত্তি করে অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার তা জেনে নেওয়া যাক।

১। সিঙ্গেল মোড ফাইবারঃ সিঙ্গেল মোড ফাইবার ক্যাবলের ব্যাস ৮ থেকে ১২৫ মাইক্রোনের মত হয়ে থাকে। এর কোরগুলি বড় ক্ল্যাডিং, গ্লাস বা প্লাস্টিকের হয়। এর ভিতর দিয়ে শুধুমাত্র একটি তরঙ্গের আলো এবং একটি ডাটাই ট্রান্সফার করা যায়। এই ফাইবারগুলি কোন প্রকার রিপিটার ছাড়াই ৩ মাইল পর্যন্ত ডাটা ট্রান্সমিশন করতে সক্ষম।

২। মাল্টিমোড ফাইবারঃ মাল্টিমোড ফাইবার ক্যাবলের ব্যাস ৬২.৫ থেকে ১২৫ মাইক্রোনের মত হয়ে থাকে। এর কোরগুলি ছোট ক্ল্যাডিং, কাচ বা প্লাস্টিকের হয়ে থাকে। ফলে এর ভিতর দিয়ে একাধিক তরঙ্গের আলোক রশ্মি এবং একসাথে একাধিক ডাটা ট্রান্সমিশন করা যায়। কোর এবং ক্ল্যাডিং এর মধ্যে বিভেদতলে আলো সংকট কোন থেকে বেশি কোন আপাতিত হওয়ার ফলে সম্পূর্ণ প্রতিফলন হয়। তাই এই ধরনের ফাইবার দিয়ে বেশি দূরত্বে ডাটা ট্রান্সমিশন করা যায় না।

অপটিক্যাল ফাইবার এর বৈশিষ্ট্য

অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্কের প্রধান ব্যাকবোন হিসেবে পরিচিত। উচ্চগতির মাধ্যমে কোন প্রকার ডাটা লস ছাড়াই তথ্য আদান প্রদানে এর জুড়ি নেই। তাই অপটিক্যাল ফাইবার এর বৈশিষ্ট্য অন্যান্য ক্যাবলের থেকে অনেকটাই আলাদা। চলুন তাহলে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের বৈশিষ্ট্য গুলি জেনে নেই।

১। উচ্চ ব্যান্ডউইথঃ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল অন্যান্য ক্যাবল থেকে অধিক উচ্চগতি সম্পন্ন। এর গতি আলোর গতির সমান। তাই এর মধ্য দিয়ে উচ্চ গতির ডাটা তুলনামূলক কম সময়ে প্রেরণ করা যায়।

২। আকারে ছােট এবং ওজন অত্যন্ত কমঃ অপটিক্যাল ফাইবারের আকার মাইক্রোমিটার স্কেলে হয়ে থাকে। সাধারণত ৮ থেকে ১২৫ মাইক্রোন রেঞ্জের ভিতর অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয়। তাই এর আকার ছোট অ ওজন কম হওয়ায় ব্যবহারে কোন প্রকার জামেলা পোহাতে হয় না।

৩। শক্তি ক্ষয় কম করেঃ এই ক্যালবের ভিতর দিয়ে ডাটা আলোর প্রতিফলনের মাধ্যমে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে। এর ফলে কোন প্রকার ডাটা লস হয় না। পাশাপাশি শক্তির ক্ষয়ও কম হয়।

অপটিক্যাল ফাইবার এর বৈশিষ্ট্য
অপটিক্যাল ফাইবার এর বৈশিষ্ট্য

৪। রাসায়নিক নিষ্ক্রিয়তাঃ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয়। হলে কোন রাসায়নিক পদার্থ এর কোন ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে না।

৫। বিদ্যুৎ চৌম্বক প্রভাব হতে মুক্তঃ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলে এক সঙ্গে এক বা একাধিক তরঙ্গের ডাটা ট্রান্সমিট করা যায়। এই তরঙ্গগুলি বিদ্যুৎ বা চৌম্বক প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। ফলে বিদ্যুৎ চৌম্বক প্রভাবে শক্তির কোন অপচয় হয় না।

৬। ডেটা সংরক্ষণের গােপনীয়তা ও নিরাপত্তাঃ অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে প্রেরিত ডাটা সবসময় নিরাপদে থাকে। এবং প্রতিটি ডাটা সংরক্ষণে গোপনীয়তা অবলম্বন করে থাকে। ফলে কোন ডাটা চুরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

৭। মাল্টি ডাটা প্রেরণঃ পূর্বে অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার তা জেনেছি। অপটিক্যাল ফাইবারের প্রকারভেদ থেকে জানতে পেরিছি এই ক্যাবলের মাধ্যমে একাধিক তরঙ্গের ডাটা পেরণ করা সম্ভব। তাই বিভিন্ন তরঙ্গ ও একাধিক তথ্য প্রেরণে অপটিক্যাল ফাইবারের বিকল্প কোন ক্যাবল নেই।

৮। অধিক ব্যবহার উপযোগীঃ অপটিক্যাল ফাইবার গিগাবাইট রেঞ্জ বা তার থেকে বেশি দ্রুত গতিতে ডেটা চলাচল করতে পারে। এই ফাইবার ক্যাবল ডেটা সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে থাকে। একই সাথে শক্তির অপচয় অনেক কম হওয়ায় এটি অধিক ব্যবহার উপযোগী।

ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সুবিধা

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে অপটিক্যাল ফাইবার। অপটিক্যাল ফাইবার মুহূর্তের মধ্যে আমাদের পাঠানোর তথ্যকে আলোর রুপে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ট্রান্সমিট করে দেয়। এই তন্তুটি আমাদের পাঠানো তথ্য, ছবি, অডিও এবং ভিডিও আলো হিসেবেই লক্ষ লক্ষ মাইল পৌছে দেয়। এছাড়াও এই ফইবার অপটিক ক্যাবলের সুবিধা রয়েছে যা যোগাযোগপ্রযুক্তিকে আরও উন্নত করে দিয়েছে। চলুন তাহলে অপটিক্যাল ফাইবারের সুবিধাগুলি জেনে নেওয়া যাক।

১। অপটিক্যাল ফাইবার আলোর গতিতে এক স্থান হতে অন্য অন্য স্থানে ডেটা ট্রান্সমিট করতে পারে।
২। এই ফাইবার অধিক দূরত্বের স্থানেও অত্যন্ত কম সময়ে ডেটা ট্রান্সমিট করতে পারে।
৩। অপটিক্যাল ফাইবার ওজনে অনেক হাল্কা এবং সহজে পরিবহনযোগ্য।
৪। এটি বিদ্যুৎ চৌম্বক প্রভাব মত সকল পদার্থের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।
৫। ফাইবার তন্তু রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয়।

ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সুবিধা
ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সুবিধা


৬। পরিবেশের তাপ, চাপ ও আর্দ্রতা এর উপর কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারে না।
৭। ডেটার গোপনীয়তা ও সংরক্ষণে সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করে থাকে।
৮। এটি নির্ভুলভাবে ডেটা পরিবহন করতে পারে।
৯। এর মধ্য দিয়ে ডেটা ট্রান্সমিশনে শক্তির কোন অপচয় হয় না।
১০। ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সুবিধা হচ্ছে এর ডেটা প্রেরণের হার প্রায় 100 Mbps – 2 Gb ও তার বেশি হয়ে থাকে।

ফাইবার অপটিক ক্যাবলের অসুবিধা

প্রযুক্তির প্রায় প্রতিটি আবিষ্কারের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তেমনি ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সুবিধা পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। প্রিয় পাঠক, এখন ফাইবার অপটিক ক্যাবলের অসুবিধা গুলি জেনে নেবঃ

১। অপটিক ক্যাবলের অন্যতম অসুবিধা হচ্ছে, এটি অনেক ব্যয়হুল।
২। অপটিক্যাল ফাইবার কাচ বা গ্লাসের হওয়ায় একে সহজে বিভিন্ন আকৃতিতে যেমনঃ U আকৃতিতে বাকানো যায় না।
৩। অপটিক্যাল ক্যাবল স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য দক্ষ কারিগরের প্রয়োজন।
৪। এই ক্যাবল ইনস্টল করা অন্যান্য ক্যাবলের চেয়ে তুলনামূলক কঠিন।

অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার

পূর্বে অপটিক্যাল ফাইবার শুধু মাত্র ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে ব্যবহার হলেও বর্তমানে অপটিক্যাল ফাইবার বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। নিচে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার সমূহ জেনে নেব।

১। চিকিৎসাঃ চিকিৎসা ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার যুগান্তরকারী পরিবর্তন এনেছে। অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে বিভিন্ন জটিল রোগ নির্ণয় ও তার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে। বিশেষ করে রোগের দেহের ভিতরে লেজার রশ্মি প্রবেশের মাধ্যমে টিউমার, ঘা ও অন্যান্য রোগের অবস্থান ও শল্য চিকিৎসায় অপটিক্যাল ফাইবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও রোগীর দেহে সেন্সর এর মাধ্যমে বিভিন্ন অংশ imaging, তাপ, চাপসহ আরো অনেক কিছু নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে।

২। যোগাযোগঃ অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার যোগাযোগ ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ভূমিকা পালন করছে। এক দেশ থেকে অন্য দেশে দ্রুত সময়ে যোগাযোগ ও ডেটা টান্সমিশনে এর অবদান অভাবনীয়। আলোর গতিতে সকল প্রকার ইনফরমেশন পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছে।

৩। প্রতিরক্ষাঃ অপটিক্যাল ফাইবার প্রতিরক্ষা কাজেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। শ্ত্রু পক্ষের অবস্থান ও তাদের সঠিক ইনফরমেশন পেতে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

৪। সরল যন্ত্রঃ বিভিন্ন প্রকার সরল যন্ত্র প্রস্তুতের ক্ষেত্রে আলোর প্রতিফলনের নীতি প্রয়োগে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার লক্ষ করা যায়।

শেষ কথা,

অপটিক্যাল ফাইবার ডেটা টান্সমিশনের অন্যতম উপাদান। আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে অপটিক্যাল ফাইবার কি এবং বৈশিষ্ট্য, গঠন ও বিস্তারিত ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই প্রযুক্তিটি কিছু অসুবিধা থাকলেও সুবিধার পরিমাণ অনেক বেশি। তাই দ্রুত ও নিরাপদে তথ্য আদান প্রদানে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের গুরুত্ব অপরিসীম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button